“বকুল ফুল তোমার ভীষণ পছন্দের ~এসকে. শাকিল
প্রতিদিনই সকাল বেলায় একটু পায়চারি করতাম।তোমার বাড়ির দক্ষিণের ওই সরু রাস্তার বকুল তলার পাশ দিয়েই। সকাল বেলায় অনেক গুলো করে বকুল ফুল ঝরে থাকত, আমি কুড়িয়ে নিয়ে তোমায় দিতাম।বকুল ফুল তো তোমার আবার ভীষণ পছন্দের।
একদিন ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়ে গেলে আমি স্বব্যস্ত হয়ে বকুল তলায় গিয়ে দেখেছিলাম ফুল গুলো কে জানি কুড়িয়ে নিয়েছে।সেই দিন তোমায় ফুল দিতে না পারায় তুমি যে মান করেছিলে তা কি আর বলতে! অভিমানে তো কেঁদেই দিয়েছিলে, আমার ফুল কই আমার ফুল কই বলে।
আমি ঠিক সেই দিনই বুঝেছিলাম বকুল ফুল তোমার কতটা পছন্দের।
কিন্তু আজ হঠাৎ করেই আমি যে তোমার অপছন্দের কারণ হয়ে গেলাম। তোমার পছন্দের জায়গাটা দখল করে নিলো অন্য কেউ।তুমি কিভাবে যে কথাটা বলবে আমায় তা নিয়ে কতই না ইতোস্থিত বোধ করছিলে তা আমি তোমার ওই মুখ দেখেই বুঝে গিয়েছিলাম। আমি তোমার বলা’টাকে আরও সহজ করে দিয়েছিলাম তুমি যেন হাফ ছেড়ে বেঁচেছিলে সে দিন।
তারপর কতদিন দেখা হয়নি তার আর হিসেব রাখিনি। আমি আবারও গ্রামে ফিরে আসলাম। কেন জানি তোমার খোঁজ নেওয়ার ইচ্ছাটা থেকেও নাই হয়ে আছে। পুরনো অভ্যাস ছাড়তে পারিনি, সকাল বেলা একটু বের হলাম পায়চারিতে। সেই পুরনো রাস্তা ধরেই।সেই বকুল তলা গিয়ে দেখি অনেক গুলো বকুল ফুল ঝরে আছে,দুই চারদিন আগে ঝরা গুলোও মাটিতে পড়ে পচে গিয়েছে । পচা ফুল গুলো থেকে কেমন যেন এক প্রকার বিশ্রী গন্ধ বের হচ্ছে।
আমি বুঝলাম এখন আর হয়ত কেউ ফুল কুড়াই না। আর ফুল কুড়ানোর সময়ই বা কই তাদের। একটা প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য মনটা কেমন জানি উতলা হয়ে উঠলো।
আচ্ছা তোমার নতুন মানুষটাও কি তোমায় এখন রোজ ফুল কুড়িয়ে দেই? আচ্ছা; আগের মত তোমার নতুন মানুষটাও কি একদিন ফুল না দিতে পারলে ওমন ভাবে অভিমান করো তুমি তার ওপর?
তোমার ওপর আমার তো ভীষণ রকম রাগ হলো, তোমার ওই নতুন মানুষটা না হয় না দিলো! অন্তত তুমি তো ফুল গুলো কুড়িয়ে তাকে দিতে পারো! হয়ত সে অনেক খুশি হবে।
যেমনটা আমি ভাবতাম ; কোন একদিন তুমিও আমাকে বকুল ফুল কুড়িয়ে দিবে। কিন্তু তা তো আর হওয়ার সুযোগ ই হয়ে ওঠেনি।
এতদিন পর অন্তত কিছু না বুঝলেও এটা ঠিকই বুঝলাম যে
“এই জগৎতে প্রেমিক – প্রেমিকার অভাব না থাকলেও ভালোবাসার মানুষের ঠিকই অভাব রয়েছে এখনো।