সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন

স্কুলে কেউ আমার কাছে আসতে চায় না!
ঠাকুরগাঁও থেকে আনোয়ার হোসেন আকাশ / ১২৫ Time View
Update : সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

রিপন দাসের বয়স ১৩। গ্রামের লোকজন তাকে বৃক্ষশিশু নামে ডাকে। তার হাত পায়ের তালুর ঘাগুলো গোলাকার ও লম্বাকৃতি বিস্কুটের মতো দেখতে। নখগুলো বড় হয়ে সামনের দিকে কুঁকড়ে গেছে। তার মাথাতেও কালো শুকনো ঘা। ঠোঁটেও ছোট ছোট ঘা।

রিপনের বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের কেউটগাঁও গ্রামে। তার বাবার নাম মহেন্দ্র দাস। রিপনের শরীরে অজানা রোগ বাসা বেঁধেছে।

রোগের বিষয় জানতে চাইলে রিপন বলে, ‘আমার হাতে-পায়ে অনেক ব্যথা। আমি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারি না। আমি সুস্থ হতে চাই। মা-বাবা আর দুই বোন ছাড়া আমার কেউ পছন্দ করে না। স্কুলে কেউ আমার কাছে আসতে চায় না। ঠিকমতো খাইতে পারি না। চামুচ দিয়া ভাত খাই।’

জানা গেছে, জন্মের চার মাসের মাথায় অজ্ঞাত জটিল রোগে আক্রান্ত হয় সে।
গুটি গুটি শুকনো ঘায়ে ভরে গেছে তাঁর হাত-পায়ের তালু। অজ্ঞাত রোগে বন্দী হয়ে পড়েছে তাঁর শৈশব। মহেন্দ্র দাস রামের একমাত্র ছেলে রিপন। সে কেউটগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র।

রিপনের মা গোলাপী রানী রায় জানান, ২০০৭ সালে জন্মের চার মাসের মাথায় রিপনের মাথা, হাত ও পায়ের তালুতে ঘামাচির মতো দেখা দেয়। তবে ঘামাচিতে কোনো রস দেখা যায়নি। চার-পাঁচ মাস পর ঘামাচিগুলো বড় আকার ধারণ করে। তিন-চার মাস পর সেগুলো কালো হয়ে যায়। ধীরে ধীরে হাত-পায়ের তালুগুলো জালের মতো ফাটতে থাকে। এরপর থেকেই আস্তে আস্তে ঘাগুলো বড় হতে থাকে।

এ বিষয়ে রিপনের বাবা মহেন্দ্র দাস প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমি সামান্য জুতা সেলাইর কাজ করি আমার উপার্জনে পাঁচ সদস্যের পরিবার চলছে। আমার পক্ষে তাঁর চিকিৎসা ব্যয় অসম্ভব। সহযোগিতা পেলে আমার ছেলের চিকিৎসার সুযোগ হতো।’

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় ২০১৭ সালে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হয় রিপনকে। সেখানে কয়েকটি অপারেশন ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পর কিছুটা ভালো হলেও বাড়িতে ফিরে আনা হয় তাকে। এর পরে তার আর চিকিৎসা হয়নি বলে জানান মহেন্দ্র দাস।

এ বিষয়ে দৌলতপুর ইউপির চেয়ারম্যান কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা যত দূর সম্ভব সহযোগিতা করছি।’ বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
জনপ্রিয় সংবাদ
সর্বশেষ সংবাদ