নদীতে পড়া ৭ মাসের শিশুটিকে মায়ের মমতায় সুস্থ করেছিলেন শিরিন আক্তার
ঝালকাঠিতে গত ২৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে লঞ্চে আগুন দেখে প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দেওয়া যাত্রী ও শিশুকে উদ্ধারে কাজ করে সুগন্ধা নদীর দু’পাড়ের অসংখ্য মানুষ।তাদের মধ্যে দিয়াকুল গ্রামের নারী শিরিন আক্তার নদীতে পড়া সেই শিশুকে উদ্ধারের পর মায়ের মমতায় সুস্থতা করেছেন। এখন শিশুটি ভাল আছে, নিজের বাড়িতে খেলছে। তবে মা ইয়ামিনের শরীরের বেশ কটি হাড় ভেঙে শয্যাসায়ী। দরিদ্র পরিবারের নেই চিকিৎসা খরচ যোগানোর ক্ষমতা।
দিয়াকুল গ্রামের মানবিক নারী শিরিন আক্তার লালন হোসেনের স্ত্রী। স্বামী ও দুই সন্তান নিয়ে চারজনের সংসার তাঁর। স্বামী রাজমিস্ত্রী ও শিরিন আক্তার সেলাইয়ের কাজ করে সংসার চালান তিনি।প্রতিদিন তিনি ৫০০ টাকার বিনিময়ে সদরের দিয়াকুল থেকে শহরে রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন স্বামী।লঞ্চে অগ্নিকান্ডে ঘটনার দিন রাত তিনটা থেকে অসহায় যাত্রীদের উদ্ধার কাজ করছেন। ঘটনার দিন রাত তিনটা থেকে পরদিন শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত আহত যাত্রীদের সেবা সুস্থতার কাজ করেছেন তিনি।
শিরিন ৭ মাস বয়সী সন্তানকে বাঁচাতে মাতৃ স্নেহে দুধ খায়িয়ে শিশুটিকে বাঁচিয়ে তুলেন।শুধু তাই নয় নিজের মেয়ের পোষাক দিয়ে গরম করে হাসপাতালে পাঠাতে ব্যবস্তা করেন।
এলাকার লোকজন তাঁদের আশ্রয় দেন। গরম পোশাকের ব্যবস্থা করেন। তাঁদের অনেকেই দগ্ধ ছিলেন। হাত-পা ভাঙা ছিল। দ্রুত তাঁদের হাসপাতালে পাঠিয়ে চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন ছিল। দিয়াকুল গ্রামের মানুষের সহায়তায় রাত থেকে সকাল পর্যন্ত অতন্ত প্রায় ৩০০ যাত্রী হাসপাতালে পাঠাতে সহায়তা করেছেন। পরে শিশুটির বাবা মায়ের কাছে তুলে দেন তারা। কোন কিছুরি বিনিময় নয় এ মায়ের ভালোবাসা বেঁচে ফিরেন ইয়ামিন। মায়ের ভালোবাসা এমনি হয়। শিনির বলেন বিপদে মানুষকে সহায়তা করেছি, আমার দুটি সন্তান আছে। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে ইয়ামিনের পরিবার।এ মায়ের ঋণ শোধ হবার নয়।
ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চটি ২৪ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে থাকার সময় আগুন ধরে যায়। এতে এখন পর্যন্ত ৪৭ জন নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ আছেন অনেক মানুষ।