মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার হাট শ্রীকোল গ্রামের আলোচিত স্কুল শিক্ষার্থী রাজিয়া খাতুন হত্যার প্রধান আসামী হাসান শেখ (২৩) নামে এক যুবক গ্রেফতার করেছে র্যাব-৬।
২০ মার্চ সকালে হত্যাকান্ডের স্থলেই হত্যার লোহমর্ষক বর্ননায় সংবাদ সম্মেলন করেন -র্যাব-৬ এর কোম্পানী প্রধান লে: কমান্ডার এম নাজিউর রহমান।
সাংবাদিকদের তিনি জানান- ঘটনার পর থেকে র্যাব- ৬ তদন্ত শুরু করে। নজরদারী বৃদ্ধি সহ মৃত্যুর কারন উদঘাটনে ছায়া তদন্ত শুরু করে। হত্যার ঘটনার পরের দিন ১৯ তারিখ শনিবার একই গ্রামের মোঃ হাসান শেখ (২৩) নামের এক স্থানীয় যুবককে শ্রীকোল এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সে উক্ত গ্রামের মোঃ ফজলু শেখের ছেলে।
আসামী হাসান শেখ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব স্বীকার করে যে সে ভিকটিমকে নদীর চরে রসূন ক্ষেতে একা পেয়ে প্রথমে ধর্ষণ করে, পরবর্তীতে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য গলাটিপে মেরে ফেলে এবং মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারলো ব্লেড দিয়ে গলা কাটে এই নরপিশাচ। ঘটনা ছিলো পরিকল্পিত।
হত্যার ঘটনায় শ্রীপুর থানায় ১৯ মার্চ শনিবার একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা মিখিজ শেখ। মামলা নং-১১/৪২ তারিখ-১৯/৩/২০২২ইং ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড এর এজহার নামীয় মোঃ হাসান শেখকে প্রধান ও একমাত্র আসামী হিসাবে দেখানো হয়। আসামী হাসান শেখ পেশায় নসিমন চালক,নিহতের বাড়ির অদুরেই তার বাড়ি।
গত ১৭ মার্চ বৃহস্পতিবার নিখোঁজের পরের দিন ১৮ মার্চ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার শ্রীকোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রাজিয়া খাতুনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় তাদের বাড়ির পাশে কুমার নদের পাড়ে বাঁশ ঝাড়ের ভিতর ছোট এক গর্তে।
সেই সময় পুলিশ জানায় তাকে কেউ খুন করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে তারা ধারনা করছে। তবে তখন এ হত্যার ঘটনায় কাউকে আটকের বিষয়ে জানায়নি মাগুরা জেলা পুলিশ। এরপর থেকে বিষয়টির্্যাবসহ পিবিআই,সিআইডি তদন্ত শুরু করে।
আসামী গ্রেফতারের বিষয়ে নিহতের বড় ভাই রাজু শেখ শ্রীকোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধনে বলেন, তারা এ হত্যার সুষ্ঠ বিচার আশা করছেন।
এ দিকে স্কুল ছাত্রী রাজিয়া হত্যাকারীর ফাঁসির দাবিতে শ্রীকোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মানববন্ধন করে ঐ স্কুলের শিক্ষক, কর্মচারীও শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে শ্রীকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুতুবুল্লাহ হোসেন মিয়া কুটি বলেন, আমরা এই ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তি চাই দোষীদের। এরকম মর্মান্তিক ঘটনার পুনারাবৃত্তি তখনই হবে না যখন আসামীর সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে।
ঐ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আবু সাইদ বলেন, আমরা হতবাক হয়ে গেছি এই ঘটনায়। আমাদের বিদ্যালয়ে সে মাত্র ভর্তি হয়েছে। তার স্বপ্ন, পরিবারের স্বপ্ন সব চুরমার হয়ে গেছে। আমরা আসামীর সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবি করছি।