সন্ধ্যা বেলা আব্বুর বাসায় ফিরে এলো দেখে মনে হচ্ছে কোন বড় ধরনের চিন্তাই আছে।আমি কিছু বললাম না দূরে থেকে আব্বুকে দেখছিলাম। আব্বু ফ্রেস হয়ে আম্মু সাথে কথা বলছিল,ঘটক এই সময় বলছিল পাত্রের টাকা পয়সা অভাব নেই। তেমন কিছু নিবে না।আজকে ঘটক বলবো যৌতুক নিবে না।উপহার হিসাবে একটা মোটরসাইকেল, একটা ফ্রিস,ধনী পরিবার বলে কথা ৮’শ জন লোককে বৌরাতি খাওয়াতে হবে।নগত ২ লক্ষ টাকা দিতে হবে, উন্নত মানের টেবিল চেয়ার, খাঁট তো আছে।মেয়ে সুখে জন্য তো এই টুকু করতে হবে।ঘটকের কথা শুনে আব্বুর মাথায় যেন আসমান ভেঙ্গে পড়লো।
আমি দূর থেকে সবকিছু শুনতেছি আর দেখতেছিলাম। আব্বু এমন না শুনে নিজেকে ঠিক রাখতে পারলাম না।চলে গেলাম আব্বু – আম্মু সামনে।আম্মু বললো মামণি তোমার বিয়ে নিয়ে কথা চলতেছে। আমি বললাম আম্মু আমার এখনো পড়াশোনা শেষ হয়নি। কার কথা কে শুনে।আমি একটু রাগ করে আমার রুমে চলে আসলাম।
কয়েকদিন পড়ে আব্বু আর আম্মু আমাকে হেসে হেসে বললো মামণি আগামী শুক্রবার তোমার বিয়ে।এখন থেকে বিয়ে আয়োজন নিয়ে প্রস্ততি নাও। আমাদের একমাত্র সন্তানের বিয়ে বলে কথা। আমি বললাম আব্বু আমার বিয়ে জন্য এতো টাকা কোথায় পেয়েছেন? আব্বু আর আম্মু বললো টাকা বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।আমার মেয়ের বিয়ে জন্য টাকা আমার কাছে জমা আছে।আমি আর কিছু বললাম না।ঘটকের কথা মতো পাত্রের পক্ষে সকল চাওয়া পূরান করা হলো।
বৃহস্পতিবার আমার মেহেদী রজনী অনুষ্ঠানে আমার সকল বন্ধু-বান্ধাবীরা আসলো।সবাই আমার সাথে মজা করে বলছিল বিয়ে পড়ে যেত তাদের ভূলে না যায়। শুক্রবার সকাল ১১ টা থেকে খাবারের আয়োজন করা হয়েছেন।আমাদের সকল আত্নীয় স্বজন সহ পাত্র পক্ষে লোকজনসহ মোট ১২’শত লোকের খাবার আয়োজন করা হয়। এই ভাবে আমার বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হলো আমি আব্বু -আম্মুকে জড়িয়ে ধরে অনেক কান্নাকাটি করে শ্বশুর বাড়িতে রওনা দিলাম।
শ্বশুর বাড়িতে আমার ভাল লাগছিল না।আমার মনে হচ্ছে আমি কোন অন্ধকার জগৎ আরছি।এই ভাবে সবকিছু মেনে নিয়ে চলছিল আমার জীবন। আমাদের সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উপহারের জন্য জিনিসপত্রের দাবির চাহিদা বাড়তে থাকে। আমার বাড়ি থেকে যা কিছু দেওয়া হয়, এগুলো আমার শ্বশুরবাড়ি লোকদের মন ভরে না! আমার ওপর চলে আসলো নির্যাতন। আমার বাড়ি পক্ষ থেকে যাতে জিনিসপত্র বেশি করে দেওয়া হয়। শ্বশুর বাড়ি লোকজন আমাকে বাড়ি কাজে মেয়ে মতো আচার-আচরণ করতে থাকি।আমার স্বামী সবকিছু দেখে নীরব নিশব্দ থাকে। নিজেকে বড়ো অপরাধী মনে হচ্ছে আমার এই পরিস্থিতি জন্য আমার কপাল দায়ি!
লেখক….
মোঃ জাবেদুল ইসলাম
গণমাধ্যমেকর্মী সমাজসেবী সংগঠক
বিএ, সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম
(মতামত কলামে প্রকাশিত সব লেখা একান্তই লেখকের নিজস্ব মতামত। এর সাথে পত্রিকার কোন সম্পর্ক নেই)