বিএনপির বিভাগীয় ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ কেন্দ্র করে বাগেরহাট থেকে খুলনাগামী বাসসহ সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল থেকে সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, ইজিবাইক, মাহেন্দ্রসহ অন্যান্য যানকেও খুলনার দিকে যেতে বাঁধা দেওয়ায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে বাগেরহাট বাস মালিক সমিতি বলছে, মহাসড়কে ইজিবাইক, মাহেন্দ্র (থ্রি-হুইলার) ও নসিমনসহ অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে ধর্মঘট করছেন তারা।
বাসের চালক ও হেলপাররা বলেন, বাগেরহাট আন্তঃজেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সিদ্ধান্তে সোমবার সকাল থেকে সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
খুলনা যেতে কচুয়ার গোপালপুর থেকে বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ডে আসা রফিকুল ইসলাম মোল্লা বলেন, আমার এক আত্মীয় অসুস্থ। খুলনায় হাসপাতালে ভর্তি। তাকে দেখতে যাব বলে সকালে বাড়ি থেকে বাসস্ট্যান্ডে আসি। দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও কোনো বাস পাইনি। বাস তো চলছেই না অন্য কোন যানবাহনও যাচ্ছেনা। ইজিবাইক, মাহিন্দ্র চলতে দিচ্ছে না।
বেলা ১১টার দিকে বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ডের সামনে দেখা গেছে, কয়েকটি মাইক্রো বাসের পথ আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন কয়েকজন ব্যক্তি। তাদের হাতে ছিল লাঠি ও কাঠের বাতা। মাইক্রো বাস দুটিকে পরে আটকে দেওয়া হয়। দুপুর পর্যন্ত বাস স্ট্যান্ড থেকে খুলনাগামী কোনো গাড়িই ছেড়ে যায়নি। পিরোজপুর ও বরিশাল থেকেও এই পথে চলাচল করা কোনো বাস বাগেরহাটের উপর দিয়ে এদিন খুলনায় যায়নি। বেলা সোয়া ১১টার দিকে শহরের ভিআইপি মোড় এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় একটি মাইক্রো আটকে চালক ও যাত্রীদের মারধরের ঘটনা ঘটে।
বাগেরহাট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুজা উদ্দিন মোল্লা সুজন বলেন, তারুণ্যের সমাবেশে যাতে নেতাকর্মীরা আসতে না পারে এজন্য সকাল থেকেই বাস বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে গতরাতেই অধিকাংশ নেতাকর্মী কর্মসূচিতে অংশ নিতে খুলনাতে চলে এসেছেন। বিএনপি, যুবদলসহ সকল অঙ্গসংগঠন মিলে প্রায় ৫ হাজার নেতাকর্মী খুলনার সমাবেশে অংশ নেন। এর আগেই খুলনায় অনুষ্ঠিত বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রকাশ্যে বাঁধা ও মারধরের ঘটনা ঘটলেও, এই সমাবেশে তুলনামূলক রাস্তাঘাটে বাঁধা ও হামলার ঘটনা অনেক কম ছিল বলে জানান তিনি।
বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, চোর সন্দেহে সাহাপাড়া (ভিআইপি মোড়) এলাকায় কয়েকজনকে আটকে রাখার কথা শুনেছি। তাদের সাথে মাইক্রো ছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যান চলাচল বন্ধ বা কোথাও বিএনপির লোকদের বাধা দেওয়ার কোনো খবর জানা নেই। বিএনপির পক্ষ থেকেও কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
যানবাহন বন্ধের বিষয়ে বাগেরহাট বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তালুকদার আব্দুল বাকী জানান, ইজিবাইক, মাহেন্দ্র (থ্রি-হুইলার) ও নসিমনসহ মহাসড়কে অযান্ত্রিক ও অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে তারা ধর্মঘট করছেন। কোন দলের কোন কর্মসূচির সাথে তাদের এই ধর্মঘটের কোন সম্পর্ক নেই।